পেকুয়া ( কক্সবাজার) প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের পেকুয়ায় টৈটং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলমের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এতে অংশ নেন স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের একটি অংশ। স্কুলের নানা অনিয়ম দূর্নীতির নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বিকাল ৩ টা দিকে উপজেলার টৈটং বাজারের প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগ কাগজে দেখা যায়, টইটং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলম নানা অনিয়ম দূর্নীতি করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, তিনি অতিরিক্ত ক্লাসের টাকা আত্মসাৎ, করোনাকালীন এ্যাসাইন্টমেন্টের নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ,প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকদের নায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা,প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মাঝে প্রাতিষ্ঠানিক বেতন বৈষম্য,শিক্ষক কর্মচারীর সাথে অশালীন ব্যবহার,বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন ও ভর্তিবাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আত্মসাৎ,২০২৩ সালের প্রণোদনার ৫ লক্ষ টাকা উন্নয়ন কাজে না লাগিয়ে আত্মসাৎ করা,শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ,শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মাসিক ও পরীক্ষার ফি আদায়, কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক হেনস্থা,একদিনের অনুপস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে জরিমানা আদায়,শিক্ষকদের সময়মতো সম্মানী প্রদান না করা, ভাউচার বানিজ্য,প্রাতিষ্ঠানিক বিশৃঙ্খলা,বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আজীবন সদস্য করানো,প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খরচের হিসাব মাস শেষে না করা,শিক্ষক/কর্মচারীদের নিয়োগের থেকে ১ বছর ৩ মাস পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোন সম্মানী না দেওয়া,স্কুল ছুটির পর অফিস খোলা রেখে কর্মচারীকে রাত ৯ টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা,সরকারি ক্যাশ বইতে আয় ব্যায় সংরক্ষন না করা।
মানববন্ধনে স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া মির্জা বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষক স্কুলের ছাত্রীদের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানেন না। ছাত্রীদের সাথে সবসময় খারাপ ব্যবহার করতেন তিনি। মেয়ের অনেক ব্যক্তিগত সমস্যা থাকতে পারে সেগুলো নিয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করেন। এ প্রধান শিক্ষকের শিক্ষকতা করার যোগ্যতা নেই। তাই আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি। দ্রুত সময়ে তাকে পদত্যাগ করা বা হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য থাকবো।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ রিয়াদ হোসাইন বলেন, আমাদের প্রাণের বিদ্যাপিট টইটং উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলম একজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক। তিনি নানা অনিয়ম দূর্নীতি করে সুনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন স্কুলে এসব অনিয়ম দূর্নীতি বন্ধের দাবি নিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। এরই প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ প্রতিবেদন প্রকাশ এবং দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ না করলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলম অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি এসবে জড়িত নই।