শায়েক আহমদ
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-১
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় একটি অসহায় পরিবার কে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জোরপূর্বক বসতভিটা এবং জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে যায় কক্সবাজারের রামু উপজেলাধীন খুনিয়া পালং ইউনিয়নের দারিয়ারদিঘী মৌজায় শতবছরের অধিক সময় যাবত ভোগদখলকারী হিসেবে রয়েছেন জায়গার বর্তমান মালিক ও দখলকারী আব্দুল গফুর। তারা এই জায়গায় জন্মের পর থেকে আজ-অব্দি দখলে রয়েছেন। আব্দুল গফুর ড্রাইভারের পিতা মৃত কালা মিয়া এবং তার পিতামহ এই জমির প্রকৃত মালিক বলে জানা যায়। এলাকায় অনেক বয়োবৃদ্ধ লোকেরাও জানেন যে এই জমি আব্দুল গফুর এবং তার পিতা মহের ছিলো।
মোহাম্মদ শফি গং রাজনৈতিক প্রভাব এবং পারিবারিক ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জমির মূল মালিকদের কাছ থেকে বসতভিটা এবং জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এলাকায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের কাছে গিয়েও যখন তাদের পক্ষে সালিশের রায় নিতে পারেননি। তারপর আদালতে গিয়ে একটি মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা করেন। যে মামলায় বিবাদী করা হয় আব্দুল গফুর ড্রাইভার এবং গফুরের মা প্রায় শতবছরের উর্ধ্বে বয়স্ক একজন মহিলাকে। এই মামলা এখনো আদালতে চলমান রয়েছে।
মামলায় যে তথ্য প্রমান উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে কায়সার আবেদীনের বাবা মৃত জয়নাল আবেদীন জমির প্রকৃত মালিক এবং তারা জমি দখল করতে গেলে জমির বর্তমান দখলদাররা তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। মামলায় আরো উল্লেখ করেন যে তারা যদি দাবিকৃত চাঁদা না পায় তাহলে হাত-পা কেটে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করেন বলে মামলা সূত্রে জানা যায়।
দৈনিক মেহেদীর হাতে আসা তথ্য বলছে আব্দুল গফুর ড্রাইভারের পিতা মৃত কালা মিয়া এবং মৃত কালা মিয়ার পিতামহ থেকে শুরু করে তাদের বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত সম্পূর্ণ বৈধ কাগজপত্রের মাধ্যমে এই জমি দখলে আছেন তারা। তথ্য বলছে প্রায় শতবছর পূর্বে থেকে তারা এই জমির দখলে রয়েছেন। বসতভিটা এবং জমির বর্তমান মালিকগণ আর,এস খতিয়ান মূলে এই জমি দখলে রয়েছেন। এই জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় একটি সালিশ হয় যেখানে মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলেরা বৈধ কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি বলে জানানো হয়েছিল।
আদালতে কায়সার আবেদীনের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জমির বর্তমান মালিক এবং দখলদার আব্দুল গফুর বলেন আমার পিতা মৃত কালা মিয়া এবং আমার দাদা থাকাকালীন সময়ের অনেক আগে থেকেই আমরা এই জমির বৈধ মালিক। গফুর বলেন আমাদের কাছে জমির বৈধ কাগজপত্র ( আর,এস খতিয়ান) থাকা সত্ত্বেও জমির প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তাদের। তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং আমাদের নামে বিভিন্ন মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জমি দখল করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা যে জমির প্রকৃত মালিক তা এলাকার গণমান্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে সবাই জানেন। কিন্তু তারা আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান গফুর ড্রাইভার ।
আব্দুল গফুর ড্রাইভারের মা আমেনা খাতুন প্রায় শত বছরের বৃদ্ধ এই নারী বলেন আমার বিবাহের আজকে ১০৩ বছর। আমার বিবাহের পর থেকে আজ-অব্দি আমি এই বাড়িতে বসবাস করছি। আমাদের দখলে থাকা বসতবাড়ি এবং জমি আমার শ্বশুর-শ্বাশুরী থাকা অবস্থায়ও আমাদের দখলেই ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে শুনতে পাই যে এই জমির মালিক নাকি মৃত জয়নাল আবেদীন ছিলো। তারা আদালতে যে মামলাটি করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানান শত বছরের বয়স্ক নারী আমেনা খাতুন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিগণ বলেন আমরা জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি এই জমির মালিক আবদুল গফুর ড্রাইভার এর পিতা মৃত কালা মিয়া।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী কায়সার আবেদীন বলেন আমার বাবা মৃত জয়নাল আবেদীন আমার বড় মামা থেকে জমি কিনেছিল এবং একসময় আমরা এই জমির দখলেও ছিলাম। কিন্তু গত কয়েক বছর পূর্বে জোরপূর্বক আমাদের এই জমি তারা দখল করে নেয়। আদালতে মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে কায়সার আবেদীন বলেন আমাদের ক্রয়কৃত জমি ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেছি।
উল্লেখ্য যে, কক্সবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে উভয় পক্ষের মামলা চলমান রয়েছে।