মোহাম্মদ আরফাত
কক্সবাজার পৌরসভার পাহাড়তলী এলাকায় ভাড়াটিয়া কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় আনোয়ারা বেগম (৪০) পাহাড়তলী বউবাজারে কাচামালের ব্যবসা করে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে জীবন যাপন করেন। আনোয়ার বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে জীবনের সাথে সংগ্রাম করে সংসার চালাতে হচ্ছে। তার এবং ছেলে-মেয়েদের সুযোগসুবিধার কথা চিন্তা করে প্রতি মাসে ৬৫০০ টাকা ভাড়ায় প্রায় বছরখানেক পূর্বে পাহাড়তলী এলাকার ফরিদা ইয়াসমিনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন আনোয়ার বেগম। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসের ৫-১০ তারিখের মধ্যে ভাড়া পরিশোধ করার কথা রয়েছে। জানা যায় চলতি মাসে (সেপ্টেম্বর) ১০ তারিখ অতিক্রম হয়ে গেলেও ভাড়া পরিশোধ করতে পারেনি যার কারণে বাড়ির মালিক ফরিদা ইয়াসমিন ভাড়াটিয়া আনোয়ারা এবং মেয়েদের লাঞ্চিত ও মারধর করেন।
আনোয়ারা জানায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে আনোয়ারা বাসায় অনুপস্থিত থাকলে হঠাৎ করে ফরিদা ইয়াসমিন তাদের বাসায় এসে বিভিন্ন ধরনের আজেবাজে কথা বলতে থাকেন। এসময় বাড়ির মালিক ফরিদা ইয়াসমিন আনোয়ারার ছোট মেয়েকে বলেন হাত-পা এবং শরীর টিপে দেওয়ার জন্য। তার মেয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে ফরিদা আজেবাজে গালিগালাজ করতে থাকেন এবং বলেন তোর মা কোথায় গেছে আজকের মধ্যেই আমার বাড়ি থেকে বাসা ছেড়ে চলে যাবি। এভাবে তর্কবিতর্ক চলতে থাকলে তা একসময় ঝগড়ায় রুপ নেয়।
বাড়ির মালিক ফরিদা ইয়াসমিন ভাড়াটিয়া আনোয়ারা বেগম কে এভাবে লাঞ্চিত করে দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় গত ২০ সেপ্টেম্বর একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায় বলে জানান ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পূর্বে তাদের কোন বক্তব্য নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া আনোয়ারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একজন মহিলা বলেন, ঘটনার দিন আমি আমার বাসায় বসে ছিলাম হঠাৎ করে আনোয়ারার বাসায় উচ্চস্বরে গালিগালাজ শুনতে পেয়ে তাদের বাসায় যাই। বাসায় ঢুকতেই শুনি বাড়ির মালিক ফরিদা ইয়াসমিন আনোয়ারার ছোট ছোট মেয়েদের যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে। এসময় ফরিদা ইয়াসমিন বারবার তাদের মারধর করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী এই নারী আরো বলেন আমি এমন অন্যায় কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন ফরিদা ইয়াসমিন।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা বেগমের নাবালিকা মেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বাড়িওয়ালী আন্টি প্রতিদিনই আমাদের বাসায় এসে বলে তার হাত-পা ম্যাসাজ করে দেওয়ার জন্য। মেয়েটি আরও জানায় বাড়িওয়ালী তাকে দিয়ে বাসার বিভিন্ন ধরনের কাজ করাতে চায়। মেয়েটি বাড়ির মালিক ফরিদা ইয়াসমিনের কথায় রাজি না হলেই বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল গালিগালাজ করেন বলে জানায় আনোয়ারা বেগমের মেয়ে।
আনোয়ারা বেগমের বিষয়ে জানতে চাইলে বউবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি বলেন আনোয়ারা একজন ভালো মহিলা তাকে কোনদিন কোন খারাপ কাজে জড়িত হওয়ার খবর পাইনি।
এমন অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বাড়ির মালিক ফরিদা ইয়াসমিনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন একথা বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।
উক্ত ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আনোয়ারা বেগম বাদী হয় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, আনোয়ারা বেগম ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে নগর উন্নয়ন সেক্টরে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন বলে জানা যায়।