এই ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা জসিম বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন। এখন মুনাফা তো দূরের কথা, আসল টাকাই ফেরত পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন গ্রাহকেরা। উখিয়ার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ লাখ লাখ টাকা এই সংগঠনে বিনিয়োগ করেছিলেন। ওই সময় জসিম বলেছিলেন- ব্যাংকে রাখলে ১ লাখ টাকায় যে অর্থ পাওয়া যাবে, তার চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ মিলবে এই সংগঠনে। ভাউচার বিহীন খরচ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা, ব্যাক্তিগত নামে গাড়ি ক্রয় ১ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা, অফিস ডেকোরেশন বাবদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার সহ বিশাল মন গড়া তালিকা। আবার অনেকেই বলছেন- সবার অজান্তে বিভিন্ন অবৈধ খাতে হয়েছে অস্বাভাবিক লেনদেন! সবমিলিয়ে কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনাকে ঘিরে উখিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দৈনিক আজকের কক্সবাজার বার্তার নিজস্ব অনুসন্ধান এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া ৩সদস্য বিশিষ্ট একটি অডিট কমিটির তদন্তে অর্থ তছরুপের ভয়াবহ এ চিত্র উঠে এসেছে। গঠিত সেই অডিট টিমের উপরোক্ত রিপোর্টে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বার পর্যন্ত হিসাব বিবরণী রয়েছে। তাদের আরো তথ্যমতে- এই সংগঠনে ১৫৫৩ জন সদস্য ডিপিএস চালিয়েছে। যা হিসেব করলে টাকার পরিমান দাড়ায় ৯৭ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। এছাড়াও ৪৫৫ জন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছে শেয়ার বিক্রি করেছে এই সংগঠন এবং তাদের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করেছে ৫ কোটি ৯৮ লক্ষ, ৯হাজার ৩৩২ টাকা। সুতরাং জেএসআর এর সর্বমোট সম্পদের পরিমান দাড়ায় ৬কোটি ৯৫ লক্ষ ১৪হাজার ৩৩২টাকা। এদিকে জেএসআর এর এমন কিছু তথ্য বের হওয়ার পর, দেশে ছেড়ে পালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে জেএসআর এর পরিচালনা কমিটির অনেকেই। এমন অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তবে এ বিষয়ে সভাপতি জসিম বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্যে প্রকাশ করেন- মজার ছলেই কথা গুলো বলেছেন তারা, এডিটিং করেই তা প্রচার করা হয়। তবে এমন তথ্য ফাস হওয়ায়, সাধারণ মানুষ তাদের মূলধন উঠিয়ে নেওয়ার জন্য জেএসআর এর কার্যালয় ভীড় জমাচ্ছে প্রতিদিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছে- আমি চার লাখ টাকা লাভের আশায় বিনিয়োগ করেছিলাম। চুক্তিতে লেখা ছিল- টাকাগুলো দেয়ার তিনমাস পর আমি মুনাফাসহ টাকা গুলো উত্তোলন করতে পারবো। তিনমাস উল্লেখ থাকলেও আমি ৮ মাস পর বেশ কয়েকবার টাকা উত্তোলন করতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বেশ কয়েকটি সময় নিয়েছে। তবে এখনো টাকা হাতে পাইনি। দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগকারী মোহাম্মদ আবছার জানিয়েছে- সংগঠনের জরুরী সভায় যতজন সদস্যই উপস্থিত থাকুক না কেন, জসিমের সিদ্ধান্তকে বাধ্য হয়ে সবার মেনে নিতে নয়। সে ২০১৪ থেকে এভাবে কাজ করে আসতেছে। সভায় নির্বাচনের কথা বললে, নির্বাচন করা যাবে না এবং নির্বাচন করলে প্রতিষ্ঠান থাকবে না বলে সভাপতির পদ তার জন্য নিজার্ভ রেখে দেন। উল্লেখ্য- ২০১৪ সালে ২ জন তরুণ উদ্যোক্তার মাত্র ২শ টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জে.এস.আর স্টুডেন্ট গ্রুপ এর বর্তামানে সাধারণ সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০ হাজারের অধিক।