ওমর ফারুক কক্সবাজার:
আলো, শব্দ আর স্মৃতির রেশ ধরে এগিয়ে চলা শিক্ষাজীবনের এক অনন্য সন্ধিক্ষণে—যখন একদল শিক্ষার্থী বিদায়ের প্রহর গুনছে, আর আরেকদল নবীন আনন্দে নতুন সূর্য উদয়ের অপেক্ষায়—ঠিক তখনই কক্সবাজারের কলাতলীতে এক অভিজাত হোটেল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক চমকপ্রদ আয়োজন।
অধ্যয়ন একাডেমিক সলিউশন কর্তৃক আয়োজিত এইচএসসি ও আলিম ২০২৫ ব্যাচের বিদায়ী অনুষ্ঠান এবং একাদশ শ্রেণির নবীন বরণ অনুষ্ঠানে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। যেখানে উপস্থিত অতিথিদের শুভেচ্ছা বার্তা, দিকনির্দেশনা আর শিক্ষার্থীদের মুখরতা মিলেমিশে এক অনন্য আবহ গড়ে তোলে।
অনুষ্ঠানের প্রধান মেহমান ছিলেন কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এসএম আকতার উদ্দিন চৌধুরী। স্বাভাবিক শৈলীতে তিনি বলেন, “বিদায় মানেই শুধু শেষ নয়, বরং একটি নতুন শুরু। শিক্ষার্থীরা যেন আদর্শ মানুষ হিসেবে দেশ ও সমাজে ভূমিকা রাখে—এটাই আমাদের কামনা।”
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সিটি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ মোর্শেদ। তিনি বলেন, “বইয়ের জ্ঞান যতই থাকুক, প্রকৃত শিক্ষা হলো মূল্যবোধে। সৎ মানুষ হয়ে উঠা-ই শিক্ষার সবচেয়ে বড় অর্জন।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবুল মনসুর ও সিইএইচআরডিএফ-এর প্রধান নির্বাহী ইলিয়াছ মিয়া। তাঁরা শিক্ষার্থীদের একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আত্মবিশ্বাস ও মানসিক প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক দিকনির্দেশনা দেন কক্সবাজার কর্মাস কলেজের প্রভাষক নেওয়াজ মোর্শেদ ফিরোজ। জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা বলেন নিডস বে ওয়াচ হোটেলের একাউন্ট ম্যানেজার বোরহান উদ্দিন। তাঁর বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মপ্রত্যয়ের বীজ বুনে দেয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যয়ন একাডেমিক সলিউশনের পরিচালক ও শিক্ষক নুরুল আবচার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সাঈদ হোসাইন, মঈন উদ্দিন, নাজমুল হাসান মিশকাত ও আবদুল নবী।
এই আয়োজনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রুহুল আমিন, যিনি প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও পরিচালক হিসেবে সুপরিচিত। তিনি বলেন, “প্রতিটি ছাত্রই এক একটি আলোকবর্তিকা। তাদের আলো যেন সমাজের অন্ধকার দূর করে—এই প্রত্যাশা আমাদের।”
সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান শেষ হয় দোয়া ও প্রীতিভোজের মাধ্যমে। পুরো আয়োজন ছিল সুশৃঙ্খল, আবেগতাড়িত এবং শিক্ষাপ্রেমে গড়া।
এই আয়োজন শুধু একটি অনুষ্ঠান ছিল না—বরং এক একটি হৃদয়ের সংযোগ, এক একটি স্মৃতির খোঁজে ছুটে চলা ভালোবাসার নাম। নতুনদের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা আর বিদায়ীদের চোখে আস্থা ও অশ্রুর মিশেল এদিনের অনুষ্ঠানকে করে তোলে সত্যিকার অর্থেই স্মরণীয়।